দুই বা ততোধিক কম্পিউটারকে কোনো উপায় ব্যবহার করে যুক্ত করে দিলে তাকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক(Computer Network) বলে। এর ফলে একটি কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য আদান-প্রদান ( Data Transfer ) করা যায়।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে সাধারণত ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
PAN:- ব্যক্তিগত পর্যায় যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তাকে Personal Area Network বা PAN বলা হয়। পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে সাধারণত দুটি কম্পিউটারের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। ক্যাবল বা তার অথবা ব্লু-টুথ এর মাধ্যমে PAN(প্যান) তৈরি করা হয়।
LAN :- Local Area Network কে সংক্ষেপে ল্যান (LAN) বলা হয় । একই বিল্ডিং এর মাঝে কয়েকটি কম্পিউটার নিয়ে যে নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাকে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Local Area Network) বলে। এই ধরনের নেটওয়ার্ক গঠন করা খুব সহজ। এতে ব্যবহৃত ডিভাইস সমুহের দাম খুব কম । LAN নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত ডিভাইস সমুহ হল হাব, সুইচ , রিপিটার । বর্তমানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক, ছোট-মাঝারি অফিস-আদালত ও ব্যবসা-বাণিজ্যে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN ই ব্যবহার করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য থাকে ডিভাইসসমূহের পরস্পরের মধ্যে তথ্য-উপাত্ত এবং রিসোর্স শেয়ার করা।
MAN :- মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক (Metropolitan Area Network), একে সংক্ষেপে ম্যান (MAN) বলা হয় । একই শহরের মধ্যে অবস্থিত কয়েকটি ল্যানের সমন্বয়ে গঠিত নেটওয়ার্ককে বলা হয় মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (MAN)। এ নেটওয়ার্ক ৫০-৭৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এর ডাটা ট্রান্সফার স্পিড গিগাবিট পার সেকেন্ড হতে পারে। এ ধরনের নেটওয়ার্ক এ ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো হলো রাউটার, সুইজ, মাইক্রোওয়েভ এন্টেনা ইত্যাদি।
WAN :- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (Wide Area Network), একে সংক্ষেপে ওয়্যান (WAN) বলা হয় । দূরবর্তী ল্যানসমূকে নিয়ে যে নেটওয়ার্ক গড়ে উঠে তাকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে। সাধারণত দেশের মধ্যে অথবা পৃথিবী জুড়ে এই ধরনের নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়।
'ক্লাউড' শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত। ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে যে কোনো ব্যবহারকারী পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের সুবিশাল তথ্যভান্ডার দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার এবং সংরক্ষণ করতে পারেন। আমরা বর্তমানে যারা কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করি তাদের প্রায় সবারই Facebook, E-mall বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্ট রয়েছে। আমরা ইচ্ছানুযায়ী এসব একাউন্টের মাধ্যমে স্টেটাস দিচ্ছি কিংবা মেইল আদান-প্রদান করে থাকি। এসব সেবা গ্রহণের জন্য আমাদেরকে কোনো টাকা খরচ করতে হয় না। কেননা, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এইসব সার্ভিস বা সেবা প্রদানকারী বেশকিছু কোম্পানীর বিগলু সংখ্যক সার্ভার রয়েছে, যার মাধ্যমে ভারা অসংখ্য ক্লায়েন্টকে একই সময়ে সার্ভিস প্রদান করে যাচ্ছেন। আবার কিছু সংখ্যক সার্ভিস রয়েছে যেগুলো অর্থের বিনিময়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা দান করে থাকেন। বিনামূল্যের এবং অর্থের বিনিময়ে উভয় প্রকার সার্ভিস ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের অন্তর্গত। এক্ষেত্রে কম্পিউটার রিসোর্স যেমন- হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, নেটওয়ার্ক ইত্যাদি সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে থাকে, ক্রেতা বা ব্যবহারকারী নিজস্ব কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্ভিসদাতা সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করে প্রয়োজনীয় কম্পিউটিংয়ের কাজ সমাধা করে থাকে। ক্লাউড কম্পিউটিংকে সমন্বিত টেকনোলজি হিসেবে গণ্য করা হয়, যার দ্বারা ব্যবহারকারী এবং সার্ভিস প্রদানকারী উভয়ই ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন।
ক্লাউড কম্পিউটিং পদ্ধতিকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
প্রাইভেট ক্লাউড (Private Cloud) : একক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় কিংবা থার্ড পার্টির ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয় যাতে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, এ ধরনের ক্লাউডকে প্রাইভেট ক্লাউড বলে। এ সব পরিচালনা অত্যন্ত ব্যয়বহুল, তবে অনেক বড়ো প্রতিষ্ঠানের অনেক শাখায় ডেটা সেন্টার না বসিয়ে একটিমাত্র ক্লাউড ডেটা সেন্টার স্থাপন করলে প্রতিষ্ঠানটির জন্য সাশ্রয়ী হয়।
পাবলিক ক্লাউড (Public Cloud) : জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ক্লাউডকে পাবলিক ক্লাউড বলে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত সকলের বিনামূল্যে বা স্বল্প ব্যয়ে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত অ্যাপ্লিকেশন, স্টোরেজ এবং অন্যান্য রিসোর্স ইত্যাদির সার্ভিসযুক্ত ক্লাউড-ই পাবলিক ক্লাউড। Amazon, Microsoft এবং Google ইত্যাদি তাদের নিজস্ব ডেটা সেন্টারে পাবলিক ক্লাউডের অবকাঠামো স্থাপন ও পরিচালনা করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস প্রদান করে থাকে।
হাইব্রিড ক্লাউড (Hybrid Cloud) : দুই বা ততোধিক ধরনের ক্লাউড (প্রাইভেট, পাবলিক বা কমিউনিটি) -এর সংমিশ্রণই হলো হাইব্রিড ক্লাউড। বিভিন্ন ধরনের ক্লাউড পৃথক বৈশিষ্ট্যের হলেও এক্ষেত্রে একই সাথে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে। ক্লাউড সার্ভিসের ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য একাধিক ক্লাউডকে একীভূত করা হয়ে থাকে।
মডেম (মড্যুলেটর-ডিম্যুলেটর) হল একটি যন্ত্র যা একটি প্রেরিত এনালগ সংকেতকে ডিজিটাল তথ্যে রূপান্তর করে এবং ডিজিটাল তথ্যকে পাঠানোর সময় এনকোড করে এনালগ সংকেত হিসেবে প্রেরণ করে। এর উদ্দেশ্য হল সহজে সংকেত পাঠানো এবং তা আবার একই রকমভাবে অন্য প্রান্তে পাওয়া।
যে হার্ডওয়্যার ডিভাইসগুলো কম্পিউটার, প্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোকে নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়, তাকে নেটওয়ার্ক ডিভাইস বলে।
অর্থাৎ কম্পিউটারে নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য যেসকল যন্ত্রাংশ একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে, সেসকল যন্ত্রাংশকে নেটওয়ার্ক ডিভাইস বলে।
নেটওয়ার্ক ডিভাইসের প্রকার
যে ডিভাইসের সাহায্যে নেটওয়ার্কের কম্পিউটারসমূহ পরস্পরের সাথে কেন্দ্রীয়ভাবে যুক্ত থাকে তাকে হাব বলে। হাবের মধ্যে অনেক পোর্ট থাকে। একটি হাবে কতগুলো ডিভাইস যুক্ত করা যাবে তা হাবের পোর্টের সংখ্যার উপর নির্ভর করে। অধিকাংশ হাব ৪ পোর্ট, ৮ পোর্ট এবং ১৬ পোর্ট বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
একটি হাব ডিজিটাল এবং এনালগ উভয় ডেটার সাথে ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ইনকামিং ডেটা ডিজিটাল ফর্ম্যাটে হয়, হাবকে অবশ্যই প্যাকেট হিসাবে এটি পাস করতে হবে। যাইহোক, যদি ইনকামিং ডেটা অ্যানালগ হয়, তাহলে হাব এটিকে সংকেত আকারে পাস করে।
হাবের প্রকারভেদ
সক্রিয় হাব:
সক্রিয় হাবগুলোর নিজস্ব বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে এবং নেটওয়ার্কের সাথে সিগন্যালটি ক্লিন, বুস্ট এবং রিলে করতে পারে। এটি রিপিটারের পাশাপাশি তারের কেন্দ্র উভয় হিসেবে কাজ করে। নোডের মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
নিস্ক্রিয় হাব:
নিস্ক্রিয় হাব ডেটা সিগন্যালকে একই ফরম্যাটে ফরোয়ার্ড করে। এটি কোনও ভাবেই ডেটা সিগন্যালকে পরিবর্তন করে না। নিস্ক্রিয় হাব যা নোডগুলো থেকে তারের সংগ্রহ করে এবং সক্রিয় হাব থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এই হাবগুলো সিগন্যালকে ক্লিন, বুস্ট না করেই নেটওয়ার্কে রিলে করে এবং নোডের মধ্যে দূরত্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা যায় না।
হাবের সুবিধা:
১। তুলনামূলকভাবে দাম কম।
২। বিভিন্ন মিডিয়ামকে সংযুক্ত করতে পারে।
হাবের অসুবিধা:
১। নেটওয়ার্কে ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়।
২। ডেটা আদান-প্রদানে বাধার সম্ভাবনা থাকে।
৩। ডেটা ফিল্টারিং সম্ভব হয় না।
হাব এর ন্যায় সুইচও একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে LAN ডিভাইসও বলা হয়। যার সাহায্যে নেটওয়ার্কের কম্পিউটারসমূহ পরস্পরের সাথে কেন্দ্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। একটি সুইচে কতোগুলো ডিভাইস যুক্ত করা যাবে তা সুইচের পোর্ট সংখ্যার উপর নির্ভর করে। সুইচে পোর্টের সংখ্যা ৮, ১৬,২৪ থেকে ৪৮ পর্যন্ত হতে পারে। LAN তৈরির ক্ষেত্রে হাবের চেয়ে সুইচ বেশি ব্যবহৃত হয়। স্টার টপোলজির ক্ষেত্রে সুইচ হচ্ছে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইস।
হাবের সাথে সুইচের পার্থক্য হলো হাব প্রেরক থেকে প্রাপ্ত সংকেত সকল পোর্টে পাঠায় কিন্তু সুইচ প্রেরক থেকে প্রাপ্ত সংকেত কম্পিউটারের MAC অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নির্দিস্ট পোর্টে পাঠিয়ে দেয়। ফলে সুইচ ব্যবহার করে নেটওয়ার্কের ডেটা আদান-প্রদানে বাধা বা কলিশনের সম্ভাবনা থাকে না।
সুইচের সুবিধা:
১। ডেটা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে বাধার সম্ভাবনা নেই।
২। ডেটা ফিল্টারিং সম্ভব।
৩। দুর্বল হয়ে পড়া সংকেত বর্ধিত করে গন্তব্যে প্রেরণ করে।
সুইচের অসুবিধা:
১। হাবের তুলনায় মূল্য কিছুটা বেশি।
২। কনফিগারেশন তুলনামূলকভাবে জটিল।
ব্রিজ একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস যা একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ককে ছোট ছোট সেগমেন্টে বিভক্ত করে। এর সাহায্যে ভিন্ন মাধ্যম অথবা ভিন্ন কাঠামো বিশিষ্ট একাধিক নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করা যায়। এটি একাধিক ছোট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এটি অনেকটা সুইচ বা হাব এর মতো। এক্ষেত্রে পার্থক্য হলো, হাব বা সুইচ একই নেটওয়ার্কের বিভিন্ন নোডকে সংযুক্ত করে অন্যদিকে ব্রিজ একাধিক ছোট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে।
ব্রিজের সুবিধাঃ
১। ভিন্ন মাধ্যম বিশিষ্ট অথবা ভিন্ন কাঠামো বা টপলোজি বিশিষ্ট একাধিক নেটওয়ার্কে যুক্ত করতে পারে।
ব্রিজের অসুবিধাঃ
১। ভিন্ন প্রোটকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করতে পারে না।
গেটওয়ে একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে WAN ডিভাইসও বলা হয়। এটি ভিন্ন প্রটোকল বিশিষ্ট দুই বা ততোধিক নেটওয়ার্ককে(LAN,MAN,WAN) সংযুক্ত করে WAN তৈরি করে। ভিন্ন প্রোটোকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করার সময় গেটওয়ে প্রটোকল ট্রান্সলেশন করে থাকে। বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস যেমন – হাব, সুইচ এবং রাউটার ইত্যাদি ডিভাইসসমূহ প্রোটোকল ট্রান্সলেশনের সুবিধা দেয় না।
গেটওয়ের সুবিধা
১। রাউটারের চেয়ে দ্রুত গতিসম্পন্ন এবং ডেটার কলিশন বা সংঘর্ষ কম।
২। ভিন্ন প্রোটোকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করতে পারে।
৩। ডেটা ফিল্টারিং করতে পারে।
গেটওয়ের অসুবিধা
১। অন্যান্য ডিভাইসের চেয়ে ব্যয়বহুল।
৩। কনফিগারেশন করা তুলনামূলক জটিল।
দূরত্ব বেশি হলে ক্যাবলে প্রবাহিত সিগন্যাল দূর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য প্রবাহিত সিগন্যালকে পুনরায় শক্তিশালী এবং আরো অধিক দূরত্বে অতিক্রম করার জন্য যে ডিভাইস ব্যবহৃত তাকে রিপিটার বলে।
রাউটার হচ্ছে একটি নেটওয়ার্কিং ডিভাইস, যার সাহায্যে একই প্রোটোকল বিশিষ্ট দুই বা ততোধিক স্বতন্ত্র নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা যায়। এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে ডেটা পাঠানোর পদ্ধতিকে বলে রাউটিং। যে ডিভাইস রাউটিং-এর কাজে ব্যবহৃত হয় তাকেই রাউটার বলে। ভিন্ন ভিন্ন নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য এ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। এটি LAN, MAN এবং WAN এ তিন ধরনের নেটওয়ার্কেই কাজ করে। রাউটারের মধ্যে ইন্টেলিজেন্স বা বুদ্ধিমত্তা দেওয়া থাকে যা এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে ডেটা কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ততম পথ খুঁজে বের করে। ভিন্ন ধরনের টপোলজির নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহৃত হতে পারে। সিসকো সিস্টেমস-এর রাউটার বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত হয়।
নেটওয়ার্ক টপোলজি বলতে আমরা সাধারণত বুঝি, কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো কীভাবে অপর কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর সাথে সংযুক্ত হয়ে ডেটা আদান-প্রদান করে থাকে, তার পরিকল্পনা বা ধারণা। এতে নেটওয়ার্কে ডেটা আদান-প্রদান সহজসাধ্য এবং সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য ব্যবস্থাপনার কৌশল প্রয়োগ করা। লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিগুলোর ভৌত সংযোগ বিন্যাস এবং নির্বিঘ্নে ডেটা আদান-প্রদানের যুক্তিনির্ভর সুনিয়ন্ত্রিত পথের পরিকল্পনা, এ দুইয়ের সমন্বিত ধারণাই নেটওয়ার্ক টপোলজি। একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কম্পিউটার ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি থাকতে পারে। নেটওয়ার্কে সংযুক্ত প্রতিটি যন্ত্রের (কম্পিউটার, খ্রিস্টার ও অন্যান্য পেরিফেরাল যন্ত্র) সংযোগস্থলকে সাধারণভাবে নোড (Node) নামে অভিহিত করা হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্কে সাধারণত নিচে উল্লিখিত টপোলজিগুলো ব্যবহার করা হয়।
১. ৰাস টপোলজি (Bus Topology)
২. রিং টপোলজি (Ring Topology)
৩. স্টার টপোলজি (Star Topology)
৪. ট্রি টপোলজি (Tree Topology)
৫. মেশ টপোলজি (Mesh Topology)
৬. হাইব্রিড টপোলজি (Hybrid Topology)
ৰাস টপোলজি (Bus Topology)
এ ধরনের টপোলজিতে একটি সংযোগ লাইনের সাথে সবধরনের নোড অর্থাৎ কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি বা ডিভাইস ইত্যাদি সংযুক্ত থাকে। এই প্রধান সংযোগ লাইনকে বাস (Bus) বলা হয়, যা কো-এক্সিয়াল অথবা ফাইবার অপটিক ক্যাবল দিয়ে তৈরি হয়। এটি নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন হিসেবে কাজ করে। এর লাইনের দু প্রান্তে দুটি টার্মিনেটর থাকে।
নেটওয়ার্কের প্রতিটি নোড স্বতন্ত্রভাবে বাসে সংযুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে ডেটা প্রবাহ ব্যবস্থা হয় দ্বিমুখী। ডেটা পাঠানোর প্রয়োজন হলে প্রেরক কম্পিউটার এ লাইনে ডেটা পাঠিয়ে দেয়। প্রেরিত ডেটার সাথে প্রাপক শনাক্তের তথ্যও থাকে। বাসের সাথে যুক্ত অন্যান্য প্রতিটি কম্পিউটার বাসে প্রবাহিত ডেটা পরীক্ষা করে দেখে। শুধু প্ৰাণক কম্পিউটারই ডেটা গ্রহণ করে, অন্যগুলো এই ডেটা গ্রহণ থেকে বিরত থাকে।
বাস টপোলজির সুবিধা
১. কম তার এবং সরল সংগঠনের কারণে বাস টপোলজি ইনস্টলেশন সহজ ও সাশ্রয়ী।
২. কানেক্টর বা রিপিটার দ্বারা সহজেই নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন বাস এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে
নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ ঘটানো যায়।
৩. নেটওয়ার্কে যে কোনো সময়ে নতুন নতুন ডিভাইস বা কম্পিউটার সংযুক্ত করা যায়।
৪. কোনো কম্পিউটার বিচ্ছিন্নকরণ বা নষ্ট হলেও সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে না।
৫. নেটওয়ার্কে কেন্দ্রীয় কোনো ডিভাইস বা সার্ভারের প্রয়োজন হয় না।
বাস টপোলজির অসুবিধা
১. ডেটা ট্রান্সমিশন অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়।
২. প্রধান সংযোগ লাইন বা ৰাস-এ ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে।
৩. নেটওয়ার্কে কম্পিউটারের সংখ্যা এবং দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে ব্যাপক ট্রাফিক সুষ্টি হয় এবং গতি হ্রাস পায়।
8. ডেটা সংঘর্ষ হওয়ার আশা থাকে।
রিং টপোলজি (Ring Topology)
যে টপোলজিতে রিং -এর ন্যায় কম্পিউটার নৌछগুলো চক্রাকার পথে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়ে নেটওয়ার্ক গঠন করে তাকে রিং টপোলজি বলে। এই বৃত্তাকার নেটওয়ার্কে প্রথম ও সর্বশেষ কম্পিউটার পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে এবং এতে কেন্দ্রীয় কোনো ডিভাইস বা সার্ভারের প্রয়োজন হয় না।
নেটওয়ার্কে যুক্ত প্রতিটি কম্পিউটার ডেটা প্রেরণের জন্য সমান অধিকার পায়। একটি নোঙ্ক সংকেত পাঠালে তা পরবর্তী নোডের কাছে যায়। সংকেতটি ঐ নোডের জন্য হলে সেটি সে নিজে গ্রহণ করে, অন্যথায় উরু নোড সংকেতকে তার পরবর্তী নোডের কাছে প্রেরণ করে। সঠিক নোডে না পৌছানো পর্যন্ত বৃত্তাকার নেটওয়ার্ক পথে সংকেত পরিভ্রমণ করে এবং এক পর্যায়ে তার কাঙ্ক্ষিত নোতে পৌঁছে যায়।
রিং টপোলজির সুবিধা
১. এই টপোলজিতে হোস্ট কম্পিউটার বা কেন্দ্রীয় সার্ভারের দরকার হয় না।
২. সংকেত প্রবাহ একমুখী হওয়ায় যেটা কলিশন বা সংঘর্ষ হয় না ।
৩. প্রতিটি কম্পিউটার ডেটা ট্রান্সমিশনে সমান গুরুত্ব পায়।
৪. ভারের পরিমাণ কম প্রয়োজন হয়, তাই বাস্তবায়ন খরচ কম।
রিং টপোলজির অসুবিধা
১. এই টপোলজিতে সংকেত আদান-প্রদান অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়।
২. একমুখী বৃত্তাকার পথে সংযুক্তির কারণে একটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারকে সরাসরি যেটা
প্রেরণ করতে সমর্থ হয় না এবং কোনো নোত অকার্যকর হলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে
৩. কোনো নতুন কম্পিউটার সংযোজন বা বিয়োজনে পুরো নেটওয়ার্কের কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
৪. নেটওয়ার্কে কম্পিউটার সংখ্যা বাড়ালে ডেটা ট্রান্সমিশনের সময়ও বেড়ে যায়।
৫. এই টপোলজি নিহ্মাণের জন্য টি সফটওয়্যারের দরকার হয়।
ট্রি টপোলজি (Tree Topology)
ট্রি টপোলজিতে কম্পিউটার বা নোডগুলো পরস্পরের সাথে গাছের শাখা-প্রশামার ন্যায় বিন্যস্ত ও যুক্ত থাকে। এতে একাধিক স্তরের কম্পিউটার একটি কেন্দ্রীয় হোস্ট কম্পিউটার বা সার্ভারের সাথে যুক্ত থাকে। এই হোস্ট কম্পিউটারের সাথে স্তর বিন্যাস বা হায়ারারকি (Hierarchy) অনুসারে বিভিন্ন স্তরের ডিভাইস নেটওয়ার্ক হবি বা সুইচের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। এজন্য এটিকে হায়ারারকিক্যাল টপোলজিও বলা হয়। এ ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি ঘরের কম্পিউটার তার পরবর্তী স্তরের কম্পিউটারের জন্য অন্তবর্তী হোস্ট কম্পিউটার হিসেবে কাজ করে। যে কম্পিউটারের পরে আর কোনো কম্পিউটার যুক্ত হয় না সেই কম্পিউটারকে পেরিফেরাল টার্মিনাল বা প্রাতীয় কম্পিউটার বলে। ট্রি টপোলজির নেটওয়ার্ক সহজেই সম্প্রসারণ করা যায়। এক্ষেত্রে ডেটা প্রবাহ হয় দ্বিমুখী।
ট্রি টপোলজির সুবিধা
১. যে কোনো সময়ে নতুন শাখা সৃষ্টি করে এর নেটওয়ার্ক সহজেই সম্প্রসারিত করা যায়।
২. বড় ধরনের নেটওয়ার্ক গঠনে অন্যান্য টপোলজির তুলনায় এটি বেশি সুবিধা প্রদান করে।
৩. কোনো নোড বিচ্ছিন্ন বা নতুন নোড যুক্ত করা হলে নেটওয়ার্ক কার্যক্রম ব্যাহত হয় না।
৪. ডেটা নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি।
৫. নেটওয়ার্কের কোনো শাখা নষ্ট হলে, সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে না।
ট্রি টপোলজির অসুবিধা
১. প্রধান কম্পিউটার নষ্ট হলে সমগ্র নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে।
২. অন্যান্য টপোলজির তুলনায় জটিল প্রকৃতির।
৩. ৰাস্তবায়ন ব্যয় অপেক্ষাকৃত বেশি।
৪. অন্তর্বর্তী কম্পিউটারগুলো অচল হলে নেটওয়ার্কের অংশবিশেষ অকেজো হয়ে পড়ে।
মেশ টপোলজি (Mesh Topology): যে টপোলজিতে একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কভুক্ত অন্য প্রতিটি কম্পিউটারের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকে তাকে মেশ টপোলজি বলা হয়। এতে নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলোর সাথে সরাসরি অপেক্ষাকৃত দ্রুত ডেটা আদান-প্রদান করতে পারে। এতে কেন্দ্রীয় সার্ভার বা ডিভাইসের দরকার পড়ে না। এই নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সংযোগকে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট (পিয়ার-টু-পিয়ার) লিংক বলা হয়। এটি সম্পূৰ্ণৰূপে আন্তঃসংযুক্ত (Completely interconnected) টপোলজি নামেও পরিচিত। প্রচুর পরিমাণ ভারের প্রয়োজন এবং বেশি কম্পিউটার ব্যবহৃত হওয়ায় এই টপোলজি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এর জটিল কনফিগারেশনের জন্য কম্পিউটার নেটওয়ার্কে সাধারণত এটি ব্যবহার করা হয় না।
এই টপোলজিকে n সংখ্যক নোডের জন্য প্রতিটি নোডে (n-1) টি সংযোগের প্রয়োজন হয়। নেটওয়ার্কে মোট n(n-1) তারের সংখ্যা হবে । ডেটা যোগাযোগের নির্ভরশীলতাই যেখানে মুখ্য, সেসব ক্ষেত্রে মেশ টপোলজি ব্যবহার করা হয়। যেমন- প্রতিরক্ষা বা ব্যাংকিং -এর ক্ষেত্রে এর ব্যবহার রয়েছে।
মেশ টপোলজির সুবিধা
১. অন্যান্য সব ধরনের টপোলজির তুলনায় এতে ডেটা ট্রান্সমিশন দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হয়।
২. নেটওয়ার্কে কম্পিউটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ডেটা ট্রান্সমিশনের গতি কমে না ।
৩. নেটওয়ার্কস্থ যেকোনো কম্পিউটার নষ্ট বা বিচ্ছিন্ন হলেও নেটওয়ার্ক সচল থাকে।
৪. কোনো সংযোগ ভার নষ্ট বা বিচ্ছিন্ন হলে বিকল্প সকল কম্পিউটারে ডেটা আদান-প্রদান অব্যাহত থাকে।
৫. নেটওয়ার্কে কেন্দ্রীয় কোনো ডিভাইস বা সার্ভারের প্রয়োজন হয় না।
মেশ টপোলজির অসুবিধা
১. বেশি পরিমাণ তার ও অতিরিক্ত লিংক প্রয়োজন হওয়ায় এটি ব্যয়বহুল।
২. নেটওয়ার্ক ইনস্টলেশন ও কনফিগারেশন অত্যন্ত জটিল।
৩. নেটওয়ার্কে কম্পিউটার সংখ্যাবৃদ্ধির সাথে সাথে স্বপ্নের পরিমাণও বেড়ে যায়।
হাইব্রিড টপোলজি (Hybrid Topology)
স্টার, রিং, বাস, মেশ প্রভৃতি নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে যে নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাকে হাইব্রিড টপোলজি বলে। বিশেষ কোনো কাজের ক্ষেত্রে একটিমাত্র টপোলজি স্বয়ংসম্পূর্ণ না-ও হতে পারে।
এজন্য এসব ক্ষেত্রে হাইব্রিড টপোলজি ব্যবহৃত হয়। হাইব্রিড টপোলজির উপর ভিত্তি করে ইন্টারনেট গঠন করা হয়েছে। কেননা এতে প্রায় সব ধরনের টপোলজির নেটওয়ার্কই সংযুক্ত আছে। হাইব্রিড নেটওয়ার্কের সুবিধা ও অসুবিধা নির্ভর করে ঐ নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত টপোলজির উপর।
হাইব্রিড টপোলজির সুবিধা
১. এতে ছাৰ বা সুইচ যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা যায়।
২. এই নেটওয়ার্কের ট্রাবল শ্যুটিং সহজতর ।
৩. একটি টপোলজি নষ্ট হলে অন্য কোনো টপোলজির উপর প্রভাব পড়ে না।
৪. যেহেতু এটি মিশ্র টপোলজি তাই এতে ব্যবহৃত টপোলজিগুলোর সুবিধাগুলোও এতে অন্তর্নিহিত
থাকে।
হাইব্রিড টপোলজির অসুবিধা
১. টপোলজির সংখ্যা বেশির কারণে এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া জটিল
২. এই টপোলজির ইনস্টলেশন ও কনফিগারেশন বেশ জটিল প্রকৃতির।
৩. মিশ্র টপোলজি হিসেবে এতে ব্যবহৃত টপোলজিগুলোর অসুবিধাগুলোও এতে অন্তর্নিহিত থাকে।
স্টার টপোলজি (Star Topology)
যে টপোলজিতে কম্পিউটার বা বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন- প্রিন্টার, সরাসরি একটি হাব বা সুইচের মাধ্যমে পরস্পর যুক্ত থাকে তাকে স্টার টপোলজি বলে। এ পদ্ধতিতে নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলো এই হাব বা সুইচের মাধ্যমে একটি অন্যটির সাথে যোগাযোগ ও ডেটা আদান-প্রদান করে। ফলে সংকেত আদান-প্রদানে কম সময় প্রয়োজন হয় এবং সংকেত সংঘর্ষের আশঙ্কা কম থাকে। সংকেত প্রবাহ দ্বিমুখী হয়। হাব বা সুইচ বা সার্ভার দিয়ে কেন্দ্ৰীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত স্টার টপোলজির নেটওয়ার্কে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা শনাক্ত করা সহজ হয়। সাধারণত এই টপোলজিতে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা গেলেও টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল ব্যবহারের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়।
স্টার টপোলজির সুবিধা
১. অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে ডেটা আদান-প্রদান হয়।
২. সংকেত সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা কমায়।
৩. সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক সচল রেখেই যে কোনো সময়ে নেটওয়ার্কে নতুন নোড যুক্ত করা যায়।
৪. কোনো নোড বিচ্ছিন্ন বা অচল হলেও নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ সচল থাকে।
৫. সুইচ ব্যবহারের কারণে বাস বা রিং টপোলজির তুলনায় এর ডেটা নিরাপত্তা বেশি।
৬. কম্পিউটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ডেটা ট্রান্সমিশনের পতি স্বাভাবিক থাকে।
স্টার টপোলজির অনুবিধা
১. হাব বা সুইচ বা সার্ভার অচল হলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে পড়ে।
২. প্রতিটি নোডের জন্য পৃথক পৃথক তারের প্রয়োজন হয় তাই এতে অপেক্ষাকৃত বাস্তবায়ন ব্যয় বেশি।
৩. নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলো পরস্পরের মধ্যে সরাসরি তথ্য বা ডেটা আদান-প্রদানে সক্ষম হয় না।
ইন্ট্রানেট: Intranet (ইন্ট্রানেট) একটি তথ্য পোর্টাল যা বিশেষভাবে ছোট এবং মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য ডিজাইন করা হয় । Intranet (ইন্ট্রানেট) হচ্ছে প্রাইভেট নেটওয়ার্কিং সিস্টেম । এটি সাধারণত কোন প্রতিষ্ঠানের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম । এটি অনেকগুলো লোকাল নেটওয়ার্ক এর সংযোগে গঠিত । এটি WAN বা Wide Area Network এর মাধ্যমে নিজেদের নির্দিষ্ট নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকে। এটি একটি প্রতিষ্ঠান দ্বারা সম্পূর্ণ সংরক্ষিত এবং সুরক্ষিত থাকে ।
Server হল একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম Haridwar বা software ডিভাইস যা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে। এটি ইন্টারনেটে local area network (LAN) বা wide area network (WAN) এর মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করে।
সার্ভার এর প্রধান কাজ হলো ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী deta বা তথ্য প্রদান করা অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা যে তথ্য জানতে চাই সেই গুলো সঠিকভাবে প্রদান করা । যেমন আমরা কোন ব্রাউজারে গিয়ে কোন কিছু লিখে যখন সার্চ করি তারপর আমরা যে রেজাল্টটা দেখতে পাই সেটা কিন্তু সার্ভার আমাদেরকে প্রদান করে।
Computer networking এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন আলাদা আলাদা রকমের server থাকতেই পারে।
১. ফাইল সার্ভার (File server)
ফাইল সার্ভার হলো এমন একটি সার্ভার / কম্পিউটার যেখানে বিভিন্ন ধরণের ডাটা (data) ফাইল (files) গুলোকে স্টোর এবং ম্যানেজ করা হয়।
২. ডাটাবেস সার্ভার (Database server)
এটা এমন একটি কম্পিউটার সিস্টেম যার কাজ হলো database থেকে data গুলোকে access করা এবং সেগুলোকে আবার গ্রহণ করার সাথে জড়িত সেবা প্রদান করা।
৩. ওয়েব সার্ভার (Web Server)
একটি ওয়েব সার্ভার হলো একটি server software বা hardware যেটা বিভিন্ন websites গুলোকে চালিয়ে (run) থাকে।
৪. Application server
Application server গুলোকে মূলত তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন application গুলোকে run করার উদ্দেশ্যে।
৫. Proxy server
Proxy server হলো একটি server application বা application যেটা user request এবং request এর সাথে জড়িত সার্ভারের মধ্যে একটি মধ্যস্থতাকারী ( intermediary ) হিসেবে কাজ করে।
৬. Mail Server
Mail server বা e-mail server হলো এমন এক ধরণের সার্ভার এর প্রকার যেটা নেটওয়ার্ক এর ওপরে email গুলোকে গ্রহণ এবং ডেলিভার করে থাকে।
৭. FTP server
ইন্টারনেটে প্রত্যেক দিন প্রায় প্রচুর files গুলো একটি কম্পিউটার থেকে আরেকটি কম্পিউটারের মধ্যে ট্রান্সফার (transfer) করা হয়।
ভিপিএন এর পূর্ণরূপ হলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। এটি ইন্টারনেটে আপনার ও অন্য একটি নেটওয়ার্কের মাঝে সিকিউর কানেকশন তৈরী করে দেয়। অধিকাংশ মানুষ মূলত অঞ্চলভিত্তিক ব্লক করা সাইটগুলোতে প্রবেশ করতে, তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার্থে এবং সেনসিটিভ কন্টেন্ট ব্রাউজ করার সময় নিজেকে ট্রেস করা থেকে বাঁচাতেই ভিপিএন ব্যবহার করে।
আজকাল ভিপিএন এর ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু অনেকেই আজ যে কারণে ভিপিএন ব্যবহার করে সেই কারণে ভিপিএন এর জন্ম হয়নি। ভিপিএন তৈরী করা হয়েছিল ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রাইভেট নেটওয়ার্কগুলোকে নিরাপদে সংযুক্ত করার জন্য।
ভিপিএন আপনার নেটওয়ার্ক ট্রাফিককে অন্য কোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফরোয়ার্ড করে দেয়। প্রায় সব অপারেটিং সিস্টেমেই বিল্ট ইন VPN সাপোর্ট আছে।
Read more